জীবনের লক্ষ্য

Spread the love

জীবনের লক্ষ্য

বা তোমার জীবনের লক্ষ্য

 

ভূমিকা- “লক্ষ্য পূরণ না করতে পারা যতটা না বেদনার, জীবনে কোনও লক্ষ্য না থাকাটা   তারচেয়ে বেশি দু:খজনক” এই বাক্যটির মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা কতটা প্রয়োজন। মানুষ স্বপ্ন ছাড়া বাঁচতে পারে না। যেখানে স্বপ্ন নেই সেখানে বৈপ্লবিক কোন পরিবর্তন আসে না। মানুষকে স্বপ্ন দেখতে হয় এবং তাকে বাস্তবায়নের জন্য কাজ করতে হয়, নির্ধারণ করতে হয় জীবনের লক্ষ্য। সচেতন মানুষ জীবনের লক্ষ্য ব্যতীত অগ্রসর হয় না। স্বপ্ন অনেকের থাকে কিন্তু সেই স্বপ্ন কারো সার্থক হয় আবার কারো সার্থক হয় না কারণ অনেকেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথাযথ কাজ  করে না। শৈশব থেকেই আমাদের নির্ধারণ করতে হবে জীবনের লক্ষ্য। দূর জীবনের লক্ষ্য অর্জনের জন্য  আমাদের কঠিন পথ অতিক্রম করতে হবে। কুয়াশাচ্ছন্ন পথ পাড়ি দিয়ে আমাদের পৌঁছাতে হবে বসন্তের অভিষ্ঠ লক্ষ্যে, তখনই জীবনের লক্ষ্য অর্জনের মত পরম শান্তি অনুভূত হবে।মনে রাখতে হবে লক্ষ্যহীন জীবন কখনো ভালো কোনো কিছু অর্জন করতে পারে না।  

 

জীবনের লক্ষ্য স্থির করার গুরুত্ব-  জীবনের লক্ষ্য স্থির করার গুরুত্ব অপরিসীম। লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের সংকল্প থাকতে হবে কারণ সংকল্প ছাড়া কখনো জীবন সার্থক ও সুন্দর হয় না। মানুষের এই ক্ষণিকের জীবনকে সুন্দর করতে হবে এবং সার্থক করতে হবে এজন্য প্রয়োজন একটি লক্ষ্য সৃষ্টি করা। একখণ্ড জমিতে ভালো ফল পেতে হলে যেমন ভালো বীজ দরকার একইসাথে সাধনা ও পরিশ্রম দরকার।মানুষের জীবনে সার্থকতার ফুল ফোটাতে হলে  একান্ত সাধনা ও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজই সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরিসমাপ্তি ঘটানো যায় না ।মানুষের জীবনকে  সাজাতে হলে একটি লক্ষ্য স্থির করতে হবে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য  পরিকল্পিতভাবে আমাদের এগোতে হবে। যথাযথ পরিকল্পনার হাত ধরেই আমরা জীবনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবো।

 

জীবনে লক্ষ্য স্থির করার সময়-  পৃথিবীর বয়সের তুলনায় মানুষের  বয়স খুব  কম। মানুষ পৃথিবীতে আসে অতি অল্প সময়ের জন্য তাই সংক্ষিপ্ত জীবনকে সুন্দর পরিপাটি করতে হলে জীবনের লক্ষ্য স্থির করা অপরিহার্য। ভবিষ্যৎ জীবনের লক্ষ্য  স্থির করার জন্য ছাত্র জীবন সবচেয়ে উপযুক্ত সময় ।একখণ্ড লোহা আগুনে তপ্ত করার পর তাকে আঘাত করে যে কোন আকৃতির বস্তু তৈরি করা যায় আবার একখণ্ড কাদামাটি নরম থাকা অবস্থায় তাকে যে কোন রকমের বস্তুতে পরিণত করা যায় কিন্তু লোহা যদি ঠান্ডা হয়ে যায় অথবা কাদামাটি যদি শুকিয়ে শক্ত হয়ে যায় তাহলে তাকে আর কোনো পরিবর্তন করা যায় না।  ছাত্র জীবন হলো জীবন গড়ার সবচেয়ে মোক্ষম সময় তাই এই ছাত্রজীবনেই জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে হবে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করতে হবে ছাত্র থাকা অবস্থায়। ছাত্রজীবনের তপস্যা অধ্যবসায় এবং পরিশ্রমের দ্বারা কাঙ্খিত  লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে। ব্যক্তিভেদে জীবনের লক্ষ্য ভিন্ন হয়ে থাকে। সমাজে বিভিন্ন পেশার মানুষ বসবাস করে এবং বিচিত্র পেশার মানুষ ছাড়া  সমাজ চলতে পারে না।  শিক্ষক,ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ,ব্যাংকার, আইনজীবী, উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী সহ বিচিত্র পেশার মানুষ আমাদের সমাজে রয়েছে। শিক্ষকতা পেশার মাধ্যমে আমরা জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি তেমনি ভাবে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করতে পারি। অবকাঠামো উন্নয়নে ইঞ্জিনিয়ার বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে একইভাবে  ব্যাংকিং খাতে অবদান রাখার জন্য ব্যাংকার হতে পারি।  কিন্তু বর্তমানে অনেকেই চাকরি পাওয়ার আশায় না থেকে নিজেই উদ্যোক্তা হচ্ছে। কৃষি খামার, মাঝারি শিল্প,প্রযুক্তি ব্যবহার করে বর্তমানে আমাদের অনেক তরুণ  উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধরনের পথ আমাদের চারিদিকে খোলা রয়েছে তাই নিজের সামর্থ্য,পরিশ্রমের মানসিকতা বিবেচনা করে আমাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। 

 

আমার জীবনের লক্ষ্য-  আমার জীবনের লক্ষ্য একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া। এই  লক্ষ্যের কথা শুনে অনেকেই  উপহাস করবে কিন্তু আমি অনেক ভেবে চিন্তে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছি। আমাদের দেশে প্রতিটি বাবা মা তার সন্তানকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখে কিন্তু আমার পরিবার আমাকে স্বাধীনতা দিয়েছে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ প্রত্যক্ষ করে আমি একটি বিষয় উপলব্ধি করেছি একজন উদ্যোক্তা শুধু নিজেই সফল হন না একটি দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিতে পারে। তাই গতানুগতিক পথ পরিহার করে জীবনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি এবং স্থির করেছি একজন সফল উদ্যোক্তা হবার। উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে পদার্পণ এর জন্য আমাদেরকে আর্থিক স্বচ্ছলতা যেমন আনতে হবে তেমনি ভাবে আর্থিক খাত সচল রাখার জন্য স্থায়ী ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রয়োজন হবে।

 

লক্ষ্য নির্ধারণের কারণ- প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থায় উঁচু স্তরের চাকরির যে মানসিকতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে সেটি মূলত উপনিবেশিক শাসনের ফল। এই প্রথাকে ভেঙে নতুন মানসিকতা সৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সার্বিক উন্নতি আশা করা যায় না। তাই জীবনে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণের পেছনে বেশকিছু উপযুক্ত কারণ  রয়েছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে ইউরোপীয় সমাজে ঘটে যাওয়া শিল্প বিপ্লব ইউরোপকে আর্থিক দিক দিয়ে অনেক বেশি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়েছে । পক্ষান্তরে ভারতীয় উপমহাদেশে সেই অর্থে শিল্প বিপ্লব  সৃষ্টির কোন দৃশ্যমান লক্ষণ দেখা যায়নি ফলে আমরা অন্যদেশের আমদানি করা পণ্যের ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি। অনেক ক্ষেত্রেই  আমাদের অন্য দেশের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট কোন পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা অগ্রসর না হওয়ার কারণে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পর অনেক শিক্ষার্থীকে বেকার হয়ে থাকতে হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রতিবছর যে পরিমাণ নতুন চাকরি দেওয়া সম্ভব হয় তার থেকে বেশি শিক্ষার্থী পাস করে বের হয়। অনেকেই জীবনে কাঙ্খিত চাকরি না পেয়ে হতাশার মধ্যে জীবন কাটায়। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি উচ্চশিক্ষা শেষ করে এমনকি উচ্চশিক্ষা চলাকালীন সময়ে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করব।প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবীতে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো এখন  কাগজপত্রহীন অফিস তৈরি করছে যেখানে সকল তথ্য থাকবে প্রযুক্তির অভ্যন্তরে।  পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের মানুষের সঙ্গে প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে ফলে পৃথিবীর বড় বড় প্রতিষ্ঠান  তাদের কাজ যেকোনো  দেশের  অভিজ্ঞ মানুষের দ্বারা করিয়ে নিচ্ছে। আমি সেই অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে কাজ সম্পন্ন করব। নিজে যেমন অর্থ উপার্জন করবো তেমনি অন্যকেও অর্থোপার্জন করতে সহায়তা করবো।

 

আমার লক্ষ্যের সঙ্গে দেশ ও সমাজের সম্পর্ক-  আমাদের দেশের এখনো বড় একটি সংখ্যা রয়েছে যারা প্রচলিত ধারার বাইরে খুব একটা চিন্তা করতে পারে না। চাকরির পেছনে না ছুটে জীবনে প্রতিষ্ঠা ও সম্মান অর্জন করা সম্ভব এই সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমি জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছি সফল উদ্যোক্তা হওয়ার চ্যালেঞ্জিং বিষয়কে। বাংলাদেশ বর্তমানে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এই আর্থিক প্রবাহ সচল রাখার জন্য সবথেকে বেশি প্রয়োজন স্থায়ী আর্থিক খাত।এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে আমি আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে  নিজে যেমন অর্থ উপার্জন  করবো তেমনি ভাবে আরো মানুষকে অর্থ আয়ের পথ দেখাতে পারব। শিক্ষিত সমাজ শুধু চাকরির পেছনে ঘুরে সময় অতিবাহিত করছে কিন্তু চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সকলে সফল হতে পারছে না। আমার ইচ্ছা আমি চাকরি খুঁজব না আমি অন্যকে চাকরি দিতে সমর্থ হব।  আমাদের দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে হলে যুব সমাজকে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করতে হবে।স্বনির্ভরতা অর্জনের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার চেষ্টা করব। আমাদের দেশে বর্তমানে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে এই মানুষগুলোকে স্বনির্ভরতার পথ দেখাবো  যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আউটসোর্সিং এর  প্রশিক্ষণ প্রদানের মধ্য দিয়ে তরুণদের স্বাবলম্বী হবার পথ তৈরি করে দিব।তরুণ সমাজের আত্মশক্তি উদ্বোধন করা সম্ভব হলে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির  বৃহৎ পরিবর্তন আসবে। আমার লক্ষ্য নিজে সফল হবো পাশাপাশি আমাদের দেশের তরুণ সমাজকে সফল করবো।  শিক্ষিত সমাজ রাষ্ট্রের বোঝা না হয়ে সম্পদে পরিণত করবো। তাদেরকে নিজের পরিবার ও  দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার মত সক্ষম করে তোলা।

 

লক্ষ্য অর্জনে পাঠ্যক্রম নির্ধারণ- ছাত্র জীবন জ্ঞান অর্জনের জন্য সবথেকে উত্তম সময়। বাস্তব জীবন বিষয়ে মানুষের যত বেশি ধারণা থাকবে সে ততো বেশি পরিণত জীবন লাভ করতে পারবে। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি ম্যাগাজিন,পত্রিকা,গল্প ,উপন্যাস পাঠ করি যার মধ্য দিয়ে দেশ বিদেশের সব খবর জাতে পারি।পাঠ্য বিভাগ বিবেচনায় আমি বিজ্ঞান বেছে নেব। সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য বিশেষ কোনো বিষয়ে খুব একটা প্রভাব না ফেললেও আমার ইচ্ছা কম্পিউটার সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করা। আউটসোর্সিং এর সাথে কম্পিউটারের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। আমি কম্পিউটার বিষয়ে উচ্চতর  অধ্যায়ন করতে চাই।আমার   জীবনের লক্ষ্য আউটসোর্সিং এর মধ্য দিয়ে সফল উদ্যোক্তা হওয়া তাই কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে এবং তার কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে গভীর জ্ঞান লাভের ইচ্ছা রয়েছে। কম্পিউটার বিষয়ে পড়াশোনা যত বেশি থাকবে ততই লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে। এজন্য আমি গণিত বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমি বিশ্বাস করি শুধু জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করলে হবে না বরং লক্ষ্য অর্জনে জন্য নিরলস পরিশ্রম করতে হবে। 

 

লক্ষ্য অর্জনে করণীয়-  আমি আজকের এই ছাত্রজীবনের বসে ভবিষ্যতের একটি ছবি এভাবেই দেখি- নিকট বন্ধুবান্ধব যখন উচ্চ শিক্ষা  শেষ করে চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছে সেই সময় আমি কম্পিউটারের সামনে বসে নতুন নতুন বায়ার এর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করে কাজের  অর্ডার পাচ্ছি। আমার একটি প্রতিষ্ঠান থাকবে এবং সেখানে আমার কিছু  সহকর্মী থাকবে যারা আমাকে সহায়তা করবে কাজের ক্ষেত্রে।এই স্বপ্ন তখনই সার্থক হবে যখন পরিকল্পিতভাবে আমি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবো। আমার প্রথম কাজ হবে মনোযোগ সহকারে ক্লাসের পড়া গুলো যথাযথভাবে সম্পন্ন করা। তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কে নতুন নতুন যে ধারণাগুলো আবিষ্কৃত হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে জানতে বিজ্ঞান ভিত্তিক ম্যাগাজিন পড়তে হবে। গণিত বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শুধু পাঠ্য বই পড়াশোনার মধ্যে নিজেকে আবদ্ধ রাখলে চলবে না পৃথিবীর চলমান বিষয় নিয়ে জ্ঞান থাকতে হবে। 

 

সার্থকতা – গতিময় জীবনে আমাদের প্রত্যাশা থাকে অনন্ত। সেই প্রত্যাশার  প্রাপ্তি ঘটাতে হলে জীবনে একটি লক্ষ্য স্থির করতে হয়। কারণ লক্ষ্যহীন জীবন বারবার বাধাগ্রস্ত হবে এবং জীবনের গতি হ্রাস পাবে। একজন মানুষ হিসেবে আমার স্বপ্ন রয়েছে এবং সে স্বপ্নকে যদি সত্য করতে পারি তবেই  জীবনের  লক্ষ্য অর্জিত হবে । স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারলে আমার জীবন সার্থক হবে।আমি নিজে একজন সফল উদ্যোক্তা যদি হতে পারি তবে আমার দেখাদেখি সমাজের শিক্ষিত তরুণ শ্রেণী উদ্বুদ্ধ হবে এবং তারাও উদ্যোক্তা হওয়ার মত  লক্ষ্য জীবনে নির্ধারণ করবে। কোন কাজ  কখনো অসম্মানের হতে পারে এই সত্য আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তরুণ সমাজের মধ্যে জাগরণ ঘটাতে হবে ।  প্রতিটি মানুষের মধ্যে একটি প্রতিভা থাকে এবং প্রতিভাকে বিকশিত করার আত্ম শক্তি অজর্ন করতে হবে। অন্যের উপর নির্ভর না হয়ে নিজে কিছু করার অদম্য প্রেরণা জাগাতে হবে । আমার জীবনের লক্ষ্য  অর্জিত হলে দেশ ও সমাজের  উন্নয়নের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র অবদান রাখতে সমর্থ হব।

 

লক্ষ্যহীন জীবনের পরিণতি-  ‘লক্ষ্যহীন জীবন  মাঝিহীন নৌকার মত’ সে শুধু স্রোতের টানে ছুটে চলবে কিন্তু তীরে পৌঁছাতে পারবে না,তাই আমাদেরকে অবশ্যই জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। যদি আপন লক্ষ্য স্থির না করি তাহলে কাজের গতি সৃষ্টি হবে না।  আমাদের এই ছোট্ট জীবনে সফলতা আনতে হলে অবশ্যই জীবনের লক্ষ্য স্থির করতে হবে না হলে দিকভ্রষ্ট হয়ে বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। লক্ষ্যহীন জীবন কখনোই  জীবনের সত্যিকারের কূল খুঁজে পায় না। আমাদের জীবন গভীর সমুদ্রের মতো সেই সমুদ্র থেকে তীরে পৌঁছাতে হলে  যেমন পরিশ্রমের প্রয়োজন তেমনি ভাবে সঠিক পরিকল্পনা থাকতে হবে। ছাত্র জীবনে যদি লক্ষ্য ঠিক না করতে পারি তাহলে জীবনে কখনো প্রশান্তি পাওয়া সম্ভব হবে না। 

 

উপসংহার-  আমাদের দেশের  শিক্ষিত  শ্রেণি স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করলে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি গতিশীল হবে। আমি একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের বৃহৎ অর্থনীতিতে সামান্য অবদান রাখার প্রত্যাশী। আমার বিশ্বাস উদ্যোক্তা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আমাদের দেশের সকল উন্নয়নের রুদ্ধ দ্বার উন্মুক্ত করা সম্ভব। একজন সফল উদ্যোক্তা  হয়ে ওঠেন দেশের সম্পদ।  আমার মত তরুণদের মেধা, শ্রম, অধ্যবসায় ও লক্ষ্য অর্জনে অবিচল থেকে জীবনের সকল বাধা অতিক্রম করার  প্রতিজ্ঞা থাকতে হবে। আমাদের প্রাণে নতুন উদ্যম ও প্রেরণা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে স্বপ্নপূরণের অপরাজেয় উৎসাহ জায়গাতে পারলে জীবনের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top