দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য।
দুর্জন বিদ্বান হইলেও পরিত্যাজ্য।
মূলভাব : বিদ্বান ব্যক্তি সর্বত্র সম্মানিত। কিন্তু দুর্জন ব্যক্তি বিদ্বান হলেও সে সমাজের দুশমন এবং সকলেই তাকে পরিত্যাগ করে।
সম্প্রসারিত-ভাব : বিদ্যার মতাে মূল্যবান সম্পদ এ ভুবনে আর নেই। বিদ্বান ব্যক্তিকে সকলেই সম্মান করে। বিদ্বানের সংস্পর্শে এলে জ্ঞানের আলােয় মন আলােকিত হয়; এতে চরিত্র গঠনের সুযােগ ঘটে। বিদ্যার আলােয় মানুষের জীবনের অজ্ঞানতার অন্ধকার দূর হয়। বিদ্যা মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। বিদ্বানের ভূমিকায় সমাজ ও দেশ সমৃদ্ধির আলােয় আলােকিত হয়। বিদ্যার সম্মােহনী শক্তি যেমন ব্যক্তিজীবন থেকে দূর করে সংকীর্ণতা ও কলুষতার অন্ধকার, তেমনি তা সমাজকেও প্রগতির পথে ধাবমান করে। কিন্তু বিদ্বান ব্যক্তি যদি দুর্জন অর্থাৎ খারাপ প্রকৃতির হয়, তবে তার অর্জিত বিদ্যার কোনাে মূল্য থাকে না। কেননা, মনুষ্যত্ব-বিরােধী কুপ্রবৃত্তিগুলাে দুর্জন লােকের নিত্যসঙ্গী। এরা আত্মকেন্দ্রিক, লােভী ও স্বার্থপর। কোনাে কোনাে দুর্জন লােক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয় বটে, কিন্তু সার্টিফিকেট সর্বস্ব শিক্ষা এদের চরিত্র ও মানসিকতায় কোনাে পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। এরা শিক্ষিত হয়ে আরও ভয়ংকর হয়ে উঠে। কূটকৌশলী হয়ে এরা সহজ-সরল মানুষকে প্রতারিত করে। সমাজ, দেশ বা জাতি কেউ এদের দ্বারা উপকৃত হয় না। এরা সমাজ, দেশ ও জাতির জন্য অকল্যাণ ডেকে আনে। তাই দুর্জনের সান্নিধ্য কেউ কামনা করে না। সকলেই তাকে ঘৃণা করে। এরূপ দুর্জন ব্যক্তি সাপের সাথে তুলনীয়। তার অর্জিত বিদ্যার তুলনা করা চলে সাপের মাথার মণির সাথে। মানুষ সাপকে ভয় করে। সাপের কাছে গেলেই দংশনের ভয়, প্রাণনাশের ভয়। এ ভয়ে কেউ সাপের মাথার মূল্যবান মণি আনতে সাহস পায় না। বিদ্বান ব্যক্তি যদি খারাপ প্রকৃতির হয় তবে সেও সাপের মতাে ভয়ংকর। তার কাছ থেকে বিদ্যালাভের প্রত্যাশা থেকে জীবননাশ তথা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
মন্তব্য : সমাজে দুর্জনের স্থান নেই। সে বিদ্বান হলেও সর্বত্র ঘৃণিত ও পরিত্যাজ্য।