জাতীয় শোক দিবসের ওপর একটি দিনলিপি লেখ ৷

Spread the love

জাতীয় শোক দিবসের ওপর একটি দিনলিপি লেখ ৷

১৫ আগস্ট ২০২২, রবিবার

রাত ১০ টা ৩০ মিনিট, ঝিনাইদহ।

আজ শোকাবহ ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এই দিনে ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় রচিত হয়েছিল। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয় এই দিনে। তাই এ দিনটি  আমরা জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করি ।

আজ জাতীয় শোক দিবস হওয়ায় অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু আগেই ঘুম থেকে উঠি। আজকে কোনো পড়াশোনা নেই। কলেজ বন্ধ থাকায় গতকালই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম আজ জাতির পিতার জাদুঘরে যাবো । আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু রবিনও যাবে। সকাল আটটায় রবিন আমাদের বাসায় চলে আসে। দুজন নাস্তা করে বাসা থেকে বের হই।

জাতীয় শোক দিবস হওয়ায় কালো ব্যাজ ধারণ করে আমরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে যাই। জাদুঘর ভবনটিতে ঢুকে প্রথম  তলাতেই চোখে পড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। তাঁর প্রতিকৃতির মধ্যেই যেন ফুটে ওঠেছে তিনিই এদেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী, জাতির কর্ণধার। সেই সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সাথে বঙ্গবন্ধুর আলাপচারিতা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের আলোকচিত্র রয়েছে এখানে। এই কক্ষটি ছিল তাঁর ড্রইং রুম। যেখানে বসে বঙ্গবন্ধু দেশ-বিদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সাথে বৈঠক করেছেন। এই কক্ষের পাশের কক্ষটি ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের পড়ার ঘর। এখান থেকেই তিনি ৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠিয়েছিলেন।

সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠার সময় চোখে পড়ল সেই রাতের তাণ্ডবলীলার নিদর্শন। শিল্পীর তুলিতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর গুলিবিদ্ধ অবস্থার একটি প্রতিকৃতি দেখে আমার চোখে অশ্রুবিন্দু জমা হলো । দোতলায় গিয়ে প্রথমেই যে কক্ষটি পেলাম তা ছিল বঙ্গবন্ধুর বাসকক্ষ। এর পরের কক্ষটিই ছিল তাঁর শোবার ঘর, তার পরের কক্ষটি শেখ রেহানার শোবার ঘর। এ কক্ষগুলোয় এখন প্রদর্শিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারবর্গের নানা স্মৃতিচিহ্ন। এটি কেবল একটি পরিবারের স্মৃতিচিহ্ন নয় এগুলো একটি জাতির ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ৷ আমরা ঘুরে ঘুরে পুরো ভবনটি দেখে বঙ্গবন্ধুর পরিবারবর্গের ব্যবহার্য  বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখতে পেলাম। এছাড়া বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম।

তাঁর আদর্শ সম্পর্কে আমরা যতই জানতে থাকি ততই তাঁর প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা নুয়ে আসতে থাকে। ভাবতে অবাক লাগে স্বাধীনতার জন্য দেশ যাঁর কাছে চিরঋণী সেই মহান নেতাকে কীভাবে হত্যা করল ঘাতকেরা । 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top