প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার স্বরধ্বনিগুলো আধুনিক বাংলায় বিবর্তনের চারটি সূত্র লেখ
প্রাচীন ভারতীয় স্বরধ্বনি অনেক পথ আতিক্রম করে আধুনিক বাংলায় উপনিত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে ধ্বনিও পরিবর্তীত হয়েছে। আজ আমরা স্বরধ্বনির যে রূপ ব্যবহার করছি তা শত বছর আগে এমন ছিল না আবার শত বছর পরেও এমনটা থাকবে না, অনেকটা পরিবর্তন হয়ে যাবে। প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার স্বরধ্বনিগুলো আধুনিক বাংলায় বিবর্তনের ক্ষেত্রে কয়েকটি ধারা মেনে পরিবর্তীত হয়েছে। নিম্নে তা তুলে ধরা হল-
১. বাংলায় ব্যবহৃত স্বরধ্বনির আদিস্বর প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা থেকে এসেছে। মূলে আদি স্বরের পর ব্যঞ্জনবর্ণ থাকলে সেখানে দীর্ঘস্বর হওয়ার কথা। কিন্তু সংস্কৃত প্রভাবে তা হয়নি। যেমন—
প্রা. ভা. আ (প্রাচীন ভারতীয় আর্য) | ম. ভা. আ (মধ্য ভারতীয় আর্য) | প্রা. বা (প্রাচীন বাংলা) | আ. বা.(আধুনিক বাংলা) |
অদ্য | অজ্জ | আজি | আজ |
অংশু | অংসু | আঁসু | আাঁশ |
২. প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষা অদিস্বর মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষায় লােপ পেলেও বাংলা ভাষায় তা গৃহীত হয়েছে।
প্রা. ভা. আ (প্রাচীন ভারতীয় আর্য) | প্রা (প্রাকৃত) | আ. বা.(আধুনিক বাংলা) |
অতসী | তসী | তিসি |
অরিষ্ট | রিটঠ | রিটা |
৩. শব্দের আদিতে অসংযুক্ত বা ব্যঞ্জন সংযুক্ত প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার ঋ-কার মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষায় অ, ই,উ-তে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় তা রক্ষিত হয়েছে।
প্রা. ভা. আ (প্রাচীন ভারতীয় আর্য) | পালি | প্রাকৃত | আ. বা.(আধুনিক বাংলা) |
শৃগাল | সিগাল | সিআল | শিয়াল |
নৃত্য | নচ্চ | ণচ্চ | নাচ |
৪. শব্দের আদিতে অসংযুক্ত কিংবা ব্যঞ্জনসংযুক্ত প্রাচীন ভারতীয় আর্য ভাষার ঐ, ঔ মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষায় এ, ও-রূপে পরিবর্তিত হয়ে বাংলায় এসেছে।
প্রা. ভা. আ (প্রাচীন ভারতীয় আর্য) | প্রা (প্রাকৃত বাংলা) | আ. বা.(আধুনিক বাংলা) |
তৈল | তেল্ল | তেল |
লৌহ | লােহা | লােহ |
Pingback: বাংলা ভাষার ইতিহাস ও ব্যবহারিক বাংলা সাজেসন্স | Cholo Shekhe