রাত যত গভীর হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে।
রাত যত গভীর হয়, প্রভাত তত নিকটে আসে।
জীবনে নানা সংকট ঘনিয়ে আসতে পারে, কিন্তু তাতে হতােদ্যম হলে চলে না বরং সংকটের গভীরতাকে সম্ভাব্য উত্তরণের লক্ষণরূপেই গ্রহণ করতে হয়।
দিন যায় রাত আসে এটাই বহমান সময়ের ধর্ম। আলােকত দিনের শেষে রাত আসে। রাত ধীরে ধীরে গভীরতার পর্দা ছড়িয়ে নিঝুম হয়ে আসে। গভীর রাত জীবন ও জগৎকে নিঃশব্দতায় ঢেকে দেয়। কিন্তু রাত যতই গভীরতায় প্রবেশ করে তার বিপরীতে সােনালি সকালের সম্ভাবনা এগিয়ে আসে। রাত যদি গভীরতার দিকে এগিয়ে না যায় তাহলে প্রভাত নিকটবর্তী হবে না। তাই রাতের গভীরতাকে ভয় করলে চলে না বরং তাকে দেখতে হবে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে। আসন্ন প্রভাতের সম্ভাবনাকে মনে লালন করে রাতের পরিধি অতিক্রম করাই সুবিবেচনার প্রমাণ। দিন রাতের পারস্পরিক সম্পর্কের এই অনুষঙ্গটিকে আমাদের জীবনের বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে নেওয়ার প্রয়াজনীয়তা অনস্বীকার্য। কারণ জীবনের পথ বিচিত্র। এ পথ কখনাে মসণ, কখনাে কণ্টকাকীর্ণ, কখনাে বা বন্ধুর। এ বিচিত্র পথে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের মানসচেতনার রূপটিও হতে হবে বিচিত্র। জীবনে সুখের ওপাশেই থাকে দুঃখের অবস্থান। প্রতিনিয়ত, প্রতিপদে নানামুখী সমস্যা ও সংকট এসে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে ব্যাহত করে। সেজন্যেই বলা হয়, জীবন পুষ্পশয্যা নয়। সমস্যায় পড়ে হতােদ্যম হওয়া মানবধর্ম হতে পারে না। সংকট উত্তরণে সংগ্ৰাম না চালিয়ে কেউ যদি দুঃখকষ্টে হতােদ্যম হয়ে হাল ছেড়ে দেয়, তাহলে তার স্থান হয় ব্যর্থতার আঁস্তাকুড়ে। জীবনযুদ্ধে পরাজিত হয়ে তাকে হতাশা আর গ্লানিকেই বরণ করে নিতে হয়। এটা কারােই কাম্য নয় বরং সমস্যা ও দুঃখের চাপ যতই বাড়তে থাকবে, আমাদের ততই আশান্বিত হতে হবে সম্ভাব্য উত্তরণের কামনায়। সেই সাথে মনােবলকে দৃঢ় এবং সংগ্রামকে তীব্রতর করতে হবে, আর তা অব্যাহত রাখতে পারলে আমরা দ্রুত সংকট কাটিয়ে সােনালি সূর্যের মতােই সাফল্যময় জীবন রাঙিয়ে নিতে সক্ষম হবাে।
জীবনপথে চলতে গিয়ে আমাদের সর্বদা সৎ সাহস ও সংগ্রামশীতলতাকে ধরে রাখতে হবে। হতাশা ও ভীরুতাকে প্রশ্রয় দিলে জীবনের মহিমা হারিয়ে যায়।