অর্থ অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী

Spread the love

বাক্য কাকে বলে ? অর্থ অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত আলােচনা কর।

☛☛ বাক্য কাকে বলে ? অর্থ অনুসারে বাক্য কত প্রকার ও কী কী? বিস্তারিত আলােচনা কর।

মানুষের মনে ভাব প্রকাশের মাধ্যম হলাে ভাষা। ভাষার মূল উপকরণ বাক্য এবং বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ। সুবিন্যাস্ত এবং অর্থপূর্ণ বাক্য ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ ভাব বিনিময় করে থাকে। বাক্যের অন্তর্গত বিভিন্ন পদ দ্বারা মিলিতভাবে একটি অখণ্ড ভাব পূর্ণরূপে প্রকাশিত হলে তবেই তাকে বাক্য বলে।

ড. মুহম্মদ শহিদুল্লাহ বলেছেন- “একটি সম্পূর্ণ মনােভাব যে পদের দ্বারা প্রকাশ করা যায় ,তাহাদের সমষ্টিকে বাক্য বলে”
ড. এনামুল হক বলেছেন – “সুবিন্যাস্ত পদসমষ্টি দ্বারা যদি বক্তার পুরােপুরি আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পায়, তবে ঐ পদ সমষ্টিকে বাক্য নামে অভিহিত করা যাবে”।
ভাষাবিদ ড. সুনীতিকুমার চট্টেঅপাধ্যায় এর মতে – “কোনাে ভাষায় যে উক্তির সার্থকতা আছে এবং গঠনের দিক হইতে যাহা স্বয়ংসম্পূর্ণ, সেইরূপ একক উক্তিকে ব্যাকরণে বাক্য বলা হয়।”

অর্থ অনুসারে বাক্য সাত প্রকার। যথা :-
১.
বর্ণনামূলক বা বিবৃতিমূলক বা নির্দেশাত্মক বাক্য
২. প্রশ্নবােধক বাক্য
. অনুজ্ঞাসূচক বাক্য
৪. ইচ্ছা বা প্রার্থনাসূচক বাক্য
৫. বিস্ময়সূচক বাক্য
৬. কার্যকারণাত্মক বাক্য
৭.সন্দেহদ্যোতক বাক্য।

১. বর্ণনামূলক বা বিবৃতিমূলক বা নির্দেশাত্মক বাক্য : যে বাক্যে কোন ঘটনা বা ভাব বর্ণনা করা হয় তাকে বর্ণনামূলক বা বিবৃতিমূলক বা নির্দেশাত্মক বাক্য বলে। যেমন- আমি প্রতিদিন কলেজে যায়। আজ বৃষ্টি হবে না।
বর্ণনামূলক বাক্য দুই প্রকার ।
(ক) অস্তিবাচক বা হ্যাঁ সূচক বা ইতিবাচক বাক্য : যে বাক্যে কোন ঘটনা বা ভাবের ইতিবাচক বর্ণনা করা হয় তাকে অস্তিবাচক বা হ্যাঁ সূচক বা ইতিবাচক বাক্য বলে। যেমন- আমি বই পড়েছি। আজ ফুটবল খেলা দেখতে যাব।
(খ) নেতিবাচক বা না-বােধক বাক্য : যে বাক্যে কোন ঘটনা বা ভাবের নেতিবাচক বা না-বােধক বর্ণনা করা হয় তাকে অস্তিবাচক বা হ্যাঁ – সূচক বাক্য বলে। যেমন- আমি বই পড়েছি না। আজ খেলা দেখতে যাব না।।

২. প্রশ্নবােধক বাক্য: যে বাক্যে কোন ঘটনা বা ভাব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন করা হয় তাকে প্রশ্নবােধক বাক্য বলে। যেমন- তােমার নাম কী? তােমার বাড়ী কোথায়?
৩. অনুজ্ঞাসূচক বাক্য: যে বাক্যে আদেশ,অনুরােধ,অনুমতি,প্রস্তাব ইত্যাদি বােঝায় তাকে অনুজ্ঞাসূচক বাক্য বলে। যেমন: সদা সত্য কথা বলবে। রৌদ্রে ঘােরাঘুরি করবে না।
৪. ইচ্ছা বা প্রার্থনামূলক বাক্য: যে বাক্যে মনের শুভ বা অশুভ ইচ্ছা প্রকাশিত হয় তাকে ইচ্ছা বা প্রার্থনামূলক বাক্য বলে। যেমন- তােমার মঙ্গল হােক, সৃষ্টিকর্তা তােমার ভাল করুক , আমি যদি প্রধানমন্ত্রী হতাম।
৫. বিস্ময়সূচক বাক্য: যে বাক্যে মনের দুঃখ, আনন্দ,আবেগ বা উচ্ছাস প্রকাশিত হয় তাকে বিস্ময়সূচক বাক্য বলে। যেমন- আহ্, কী সুন্দর দৃশ্য ! ; হায় !হায়! আমার কী সর্বনাশ হয়ে গেল! ছি! ছি! তুমি এত খারাপ।
৬. কার্যকারণাত্মক বাক্য : যে বাক্যে কোন কারণ,নিয়ম,শর্ত ,স্বীকৃতি, ইত্যাদি অব্যয় দ্বারা প্রকাশিত হয় তাকে কার্যকারণাত্মক বাক্য বলে। যেমন: কষ্ট না করলে জীবনে সাফল্য আসে না, প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠলে তবেই শরীর সুস্থ থাকবে।
৭. সন্দেহদ্যোতক বাক্য : যে বাক্য দ্বারা বক্তার বিষয় সম্পর্কে সন্দেহ, সংশয়, সম্ভাবনা, অনুমান ইত্যাদি প্রকাশ পায় তবে তাকে সন্দেহদ্যোতক বাক্য বলে। যেমন:- আজ বৃষ্টি হতে পারে। সে নাকি চলে গেছে। তুমি চাকরি পেতে পারাে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top